যখন কেউ বিপদে পড়েন, সৃষ্টিকর্তা নিজে উদ্ধারের পথ সৃষ্টি করেন। স্রষ্টার কাছে তার সকল সৃষ্টিই গুরুত্বপুর্ণ এবং মুল্যবান। সৃষ্টি জগতের জীব বৈচিত্রের মধ্যে তিনি ভারসম্য বিধানের স্বার্থে। বা সমন্বয় সাধনের জন্য ধারাবাহিক চক্রে এক পর্বের জীবকে অন্য পর্বের জীবের জন্য খাদ্য হিসেবে নির্ধারিত করে রেখেছেন। সুতরাং কোন সৃষ্টিই অনর্থক নই। যা হোক, প্রসঙ্গত কারনে আমি মানুষের বিপদে পড়া। বিপদ থেকে উদ্ধার বা পরিত্রাণের বিষয়ের মধ্যেই আমার এ লেখাকে সীমিত রাখছি। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনিই বিভিন্ন সময়ে বিপদ আপদ বা সমস্যা দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করেন।
প্রতিটি বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য এক বা একাধিক পথ বা উপায় সব সময়ই থাকে। সচরাচর বিপদ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য প্রথম পথ বা অবলম্বনই যথেষ্ট। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে বিপদ থেকে বাঁচার জন্য বিকল্প পথের অনুসন্ধানও করতে হয় বৈকি। আমি বা আমরা যখন বিপদে পড়ি সৃষ্টিকর্তাই উদ্ধার করবেন, এটা ধ্রুব সত্য। তবে এ ক্ষেত্রে আপনাকে বা আমাকে রক্ষা করার দায় বদ্ধতা কিন্তু সৃষ্টিকর্তার একার নই! সব কিছুর দায় ভার যদি সৃষ্টিকর্তার উপরেই বর্তায়। তবে তিনি কেন, শুধু শুধু রোগ, তাপ, ক্ষুধা, যন্ত্রণা দেবেন। তিনি পরিত্রাণের সহজ এবং সর্বোত্তম ব্যবস্থাই সব সময় গ্রহণ করতেন।
তাহলে, বিষয়টা এমন হতো। জগতের আমরা সবাই কুঁড়ের বাদশা হয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে আয়েস করতাম। আর খাবার, পানীয় এবং অন্য সব নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু আপনা আপনিই আমাদের কাছে হাজির হতো। বাস্তবে কিন্তু তা আসলে হয়নি। আজ কাল বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম বা সরাসরি অনেককেই বলতে শোনা যায়, বিপদ দিয়েছেন যিনি, তিনিই রক্ষা করবেন। আমিও তাদের সাথে এক মত তবে সম্পুর্ণ নই আংশিক। আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে না চেষ্টা করবেন। ততোক্ষণ পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তা কোন ভাবেই আমাদের সহায় হবেন না।
ধরুন, আপনি যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, পথের মধ্যে বিষধর সাপ ফঁণা তুলে আছে আপনাকে ছোঁবল মারার জন্য। আপনি নিশ্চয় দাঁড়িয়ে থেকে। সৃষ্টিকর্তার সরাসরি হস্তক্ষেপে সাপের কামড় খাওয়া থেকে বেঁচে যাবার জন্য অপেক্ষা করবেন না। বরং আপনি দৌড়ে পালিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করবেন। নতুবা কোন কিছু দিয়ে সাপকে আঘাত করে বাঁচার চেষ্টা করবেন। এখানে আপনার চেষ্টার মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার বিপদ থেকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টা নিহিত আছে। প্রত্যেকেরই ধর্মের প্রতি গভীর আনুগত্য ও শ্রদ্ধাবোধ থাকা অতি আবশ্যক। কিন্তু তাই বলে ধর্মীয় গোঁড়ামী বা অন্ধ বিশ্বাসের ধারণা অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া উচিত নই।