যে ভালোবাসতে পারে, সে ক্ষমাও করতে জানে। ক্ষমা এবং ভালোবাসা আসলে পরস্পরের সাথে গভীর সম্পর্কযুক্ত। যে ভালোবাসার মধ্যে ক্ষমা নেই সে ভালোবাসা অপুর্ণ ও মানসিক স্বেচ্ছাচারিতা মাত্র। আপাত দৃষ্টিতে ভালোবাসার সাথে ক্ষমার সম্পর্ক অনেকেই বাঁকা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পারেন তবে এটা ঠিক নই। পারস্পারিক বোঝাপড়া, একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস, ভূল ত্রুটি মেনে নেয়ার মানসিকতা। কিছুটা ছাড় দেয়া, আস্থা এবং নির্ভরশীলতার প্রতীক হলো ভালোবাসা। তবে কেন আমরা ভালোবাসার ক্ষেত্রে ছোট ছোট ভূল গুলো ক্ষমা করতে পারি না। এটা একটা এক গুয়েমীও বটে। অবশ্য ইদানিং কালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অবাধে ব্যবহারের সুযোগ থাকায় ভালোবাসার নকল যুগলদের মধ্যে প্রতারণা ও অবিশ্বাসই বেশী।
বর্তমানে প্রতারণা এবং ছল চাতুরির এ ভালোবাসায় পুরুষের চেয়ে নারীরা বরাবরই এগিয়ে আছে। একই সাথে এক মোবাইলে এক প্রেমিকের সাথে চ্যাট করছে। আর এক মোবাইলে অন্য প্রেমিকের সাথে কথা বলছে। আবার এরই মধ্যে তৃতীয় প্রেমিক প্রবর টাইম সিডিউল ব্রেক করে কল দিলে দ্বিতীয় জনকে হোল্ড করে রাখছে। তৃতীয় জনকে সতর্কতার সাথে চাপা সুরে বলছে, বাবু তুমি এখন কল করেছ কেন? মা পাশে বসে মামার সাথে জরুরী কথা বলছে। রাখ, আমি তোমাকে পরে ফোন করবো। আবার এ দিকে হোল্ড করে রাখা যে দ্বিতীয় জন তাকে বলছে, বাবু, আব্বু ঢাকা থেকে ফোন করেছিল। এমনই বর্তমানের প্রেম ভালোবাসার চিত্র! পার্কের প্রেমের চিত্র আবার নোংরামীতে ভরা।
আমি প্রেম ভালোবাসাকে কোন ভাবেই ছোট করছি না। শুধু সম সাময়িক একটি উদাহরণ টেনেছি মাত্র। যে উদাহরণ থেকে আমাদের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততা কতটুকু তা বোঝা যায়। এমন বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মত ভালোবাসাতে যে কেউ ক্ষমা করতে পারবেন না। সেই চিত্রটি তুলে ধরেছি। সুতরাং বিশ্বাস, ভালোবাসা, ভূল এবং ক্ষমা এক সূত্রে গাঁথা। ছলচাতুরির ভালোবাসাতে ক্ষমা করার কোন অবকাশ নেই।
কোন নির্দিষ্ট প্রকার ভালোবাসা নই। জগতে সব ধরণের সম্পর্ক যেখানে ভালোবাসার অস্তিত্ব রয়েছে। সে সব বিষয়ে ক্ষমা অবশ্যই অপরিহার্য। স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, পিতা-মাতা, সন্তান বা প্রেমিক প্রেমিকা সব ক্ষেত্রে একই কথা খাটে। সম্পর্কের যে প্রসঙ্গে আসুন না কেন। সব ধরণের ভালোবাসার ক্ষেত্রেই রাগ, অনুরাগ, অভিমান, ভুল অথবা ভুল বোঝাবুঝির যথেষ্ট সুযোগ আছে। তাই দোষ গুণ সব মেনে নিয়েই কিছুটা ছাড় দিতে হয়। অথবা কিছু বিষয়কে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে আমাদের সবাই কে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়। আমরা সমষ্টিগত ভাবে ক্ষমার মাধ্যমে মহত্ব প্রয়োগ করতে পারি বলেই মানবকুলের মধ্যে আজও জাগতিক ভারসম্য বজায় আছে। তাই ভালোবাসতে হলে ক্ষমা করতে পারা জরুরী।