নিজের মর্যাদা যে বোঝে না, অন্যরাও তার মর্যাদা দেয় না। এটি একটি চিরন্তন সত্য বাণী এবং আমাদের প্রত্যেকের জীবন এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ বাণীর বাস্তব প্রমাণ আমরা অহরহ দেখতে পাই। মানুষের মুুল্যায়ন একটি জটিল ও গুরুুুুত্বপূূূূর্ণ বিষয় এবং তা সরাসরি মানুষের ব্যক্তিত্বকে বুঝায়। ব্যক্তিত্ব অদৃশ্য ভাবে এবং সম্পুর্ণ রুপে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে। সঙ্গত কারণে এই মুল্যায়নের প্রভাবের উপর লেখার আলোকপাত। ব্যক্তিত্ব বা ব্যক্তি সচেনতা প্রত্যেক মানুষের চরিত্রে থাকা আলাদা একটি বৈশিষ্টি। এটা বিবেকের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি, বিষয় বা জিনিস সম্পর্কে তুলনা করে। আমাদের জন্য ভালো মন্দ বা প্রয়োজনের বিষয়ে মস্তিষ্কে বিভিন্ন তথ্য প্রেরণ করে। যেন আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
মস্তিষ্ক আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে। কিন্তু সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার মত কঠিন দায়িত্ব আমাদের বিবেককে পালন করতে হয়। ঠিক এখানে নিজের বিবেচনার সঠিক প্রয়োগ করতে পারা আমার বা আপনার জন্য খুবই জরুরী। কারণ এর সাথে আমাদের নিজের মর্যাদার সম্পর্কও জড়িত। ধরুন, দুই জন লোক রাস্তার পাশে কোন বিষয় নিয়ে ঝগড়া করছে। তাদের এক জন সঠিক কিন্তু অবস্থানের দিক থেকে দুর্বল। অন্য জন স্বাভাবিক বিবেচনায় অন্যায়কারী। অনতিদূরে দাঁড়িয়ে তিন জন লোক নিরপেক্ষ ভাবে ঝগড়া শুনছে ও দেখছে। আপনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এবং সবারই পূর্ব পরিচিত।
আপনি তাড়াতাড়ি তাদের ঝগড়া থামালেন। ঝগড়ার সব বিষয় শুনে, নিজের বিবেক প্রয়োগ করে সঠিক ও দুর্বল লোকটির পক্ষ নিলেন। একই সাথে যে অন্যায় করছে তাকে ধমক দিয়ে বিরত ঝগড়া করা থেকে করলেন। কোন সন্ এখানে সঠিক বিচার করার ফলে অন্যায়কারী সহ সবার কাছেই আপনি ন্যায় বিচারক ও মর্যাদাবান হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন! আবার অন্যায়ের পক্ষ নিয়ে এখানে আপনি নিজের মর্যাদাকে ক্ষুন্নও করতে পারতেন। সবাই আপনাকে খারাপ লোক ধরে নিত এবং তারা আপনাকে কোন মর্যাদাই দিত না! এখানে ছোট্ট একটি উদাহরণে নিজের মর্যাদার বিষয় বুঝিয়েছি। এমন হাজারো বিষয় রয়েছে যা মর্যাদার মুল্য নির্ধারণ করে।
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অথবা বৈশ্বিক পরিমন্ডলে, মোট কথা সর্বত্রই এ বাণীর প্রয়োগের একান্ত প্রয়োজন। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই নিজের স্বাভাবিক বিবেচনা বা চিন্তাশক্তি রয়েছে। সেই সাথে রয়েছে ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা। যা সৃষ্টিকূলের মধ্যে একমাত্র মানুষেরই আছে। স্থান, কাল, পাত্র বা অবস্থান ভেদে আমাদের কখন কি করতে হবে। বা বলতে হবে অথবা আমাদের সামগ্রিক আচরণ কেমন হবে তা একান্ত ভাবেই নিজের নিয়ন্ত্রণে। আপনি অবস্থা বুঝে সঠিক কথা, উপস্থাপনা অথবা আচরণের দ্বারা অন্যের নিকট আপনার মর্যাদা বাড়াতে পারেন। একই ভাবে বিপরীত আচরণের কারণে আমাদের মর্যাদাবোধ ক্ষুন্নও হতে পারে। বিষয়টি মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই মনে রাখা একান্ত প্রয়োজন।