বর্তমান সমাজে স্বার্থের কাছে বৃদ্ধ বাবা মা খুব অসহায়!

বর্তমান সমাজে বেশীর ভাগ পরিবারে বৃদ্ধ বাবা মায়েরা খুব অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। বৃদ্ধ বয়সে নাতি নাতনী সন্তানকে ছেড়ে তাদের থাকতে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। বিবেকহীন, অকৃতজ্ঞ এবং স্বার্থপর সন্তানের জন্য তাদের জীবন কাটছে মানবেতর ভাবে। বাবা মায়েরা তাদের সারা জীবনের সুন্দর মুহুর্ত গুলো সন্তান মানুষের জন্য ব্যয় করে বর্তমান পুরস্কার হিসেবে মানবেতর জীবন উপহার পাচ্ছেন। আমরা সন্তানেরা বিয়ের করার আগে কিন্তু তাদের অবহেলা করিনি। বিয়ের আগ পর্যন্ত আমরা, সংসার এবং বাবা মায়ের কষ্ট, সুখ, দুঃখ বা আনন্দ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছি। তখনও তাদের কষ্ট ছিল কিন্তু সন্তানের কাছে তাঁরা অবহেলিত হননি। আজ তাদের অবহেলার মূল কারণ হলো ছেলের বউ।

বর্তমান সমাজে স্বার্থের কাছে বৃদ্ধ বাবা মা খুব অসহায়!

বাবা মায়েরা ছেলেকে সুখী ও খুশি রাখার জন্য সখ করে বিয়ে দেন। ছেলের বউ ঘরে আসার পর থেকে তাদের কপাল পুড়তে শুরু করে, বর্তমান চিত্র এমনই বলে। প্রথম প্রথম নতুন ছেলে বউ, তাদের শশুড় শাশুড়ী কে বেশ সমীহ্, সম্মান ও আদর যত্ন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বৃদ্ধ বয়সে আমাদের বাবা মায়ের কপালে এতো সুখ সয় না। বড় জোড় ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে ছেলে বউ এর আসল রুপ বেড়িয়ে পড়ে। বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের মন বিষিয়ে দেবার জন্য। প্রথম প্রথম তারা শশুড় শাশুড়ীর নামে ছেলের কাছে ছোট খাট অভিযোগ বা নালিশ করে।

বর্তমান সমাজে স্বার্থের কাছে বৃদ্ধ বাবা মা খুব অসহায়!

প্রাথমিক ভাবে তারা সফল না হলেও, হাল ছাড়ে না। ছেলের বউ কৌশলে দিনের পর দিন শশুড় শাশুড়ীর নামে স্বামীর কাছে অভিযোগ করতে থাকে। লজ্জার বিষয় হলো, স্ত্রীরা ছলাকলার সময় হিসেবে পুরুষের দুর্বল মুহূর্তগুলো বেছে নেয়। সাধারণত রাতে বিছানায় ঘুমাতে যাবার সময় তারা ছলা কলা প্রয়োগ করে। একান্ত সান্নিধ্যে, দুর্বল মুহুর্তে স্ত্রীর অভিযোগ বা কথাকে সমর্থন করা ছাড়া ছেলেদের কোন উপায় থাকে না। তুলে ধরা বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ভাবে একজন স্বামী তার স্ত্রীর কাছে জিম্মি হয়। জৈবিক তাড়নার কাছে এক সময় বাবা মার প্রতি সন্তানের অকৃত্তিম ভালোবাসা হার মানে।

বর্তমান সমাজে স্বার্থের কাছে বৃদ্ধ বাবা মা খুব অসহায়!

অনেকটা সাইকোলজিক্যালি ব্রেণ ওয়াশের মাধ্যমে ছেলের বউ সন্তানের মনে মা বাবার প্রতি বিতৃষ্ণা সৃষ্টি করে। স্ত্রী যেমন বোঝায় স্বামী তেমনই বোঝে। এরই ফলে এক সময় স্ত্রীর কথা মত সন্তান তার জন্মদায়ী জন্মদাতা মা বাবাকে বোঝা মনে করে। দায়িত্ব এড়াবার জন্য স্বার্থপরের মত বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে হাফ ছেড়ে বাঁচে। এভাবে দৈহিক ক্ষুধার কাছে জন্ম পরিচয় হার মানতে বাধ্য হয়। ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নই, তবে এমন সন্তান সংখ্যায় খুবই নগণ্য। বর্তমান সময়েও দু একটা ছেলের বউ আছে, যারা শশুড় শাশুড়ীকে নিজের বাবা মায়ের মতই শ্রদ্ধা সম্মান করে।

বেশীর ভাগ শাশুড় শাশুড়ী তাদের ছেলের বউকে নিজের মেয়ের মত দেখেন। আবার অনেক শাশুড়ী আছে, যারা ছেলের বউ এর সাথে দজ্জালের মত আচরণ করে। তবে ব্যতিক্রমী এ সংখ্যাগুলো শতকরা পাঁচ ভাগের বেশী নই। বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজের সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো। শাশুড়ীরা ছেলের বউকে নিজের মেয়ের মত দেখে না এবং তার উপর অন্যায় জবরদস্তি করে। একই ভাবে ছেলের বউরা শশুড় শাশুড়ীকে নিজের বাবা মা হিসেবে ভাবতে পারে না। মুলত এ কারণেই ছেলের বৃদ্ধ বাবা মায়ের বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয়ের বিষয়টি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

বর্তমান সমাজে স্বার্থের কাছে বৃদ্ধ বাবা মা খুব অসহায়!

বর্তমান চিত্রে, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত আপনার আমার মত সন্তানদের অতি বউ প্রীতি বেশী লক্ষণীয়। স্ত্রীর নিকট একজন সন্তানের দায়িত্ব কর্তব্যকে বিস্বর্জন দেয়াতে বৃদ্ধ বাবা মায়ের আজ এমন করুণ পরিণতি। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে দু কলম লেখার আগে নিজেকে সংশোধন অপরিহার্য্য।

Leave a Reply